যেকোনো পরিস্থিতিতে ছাব্বিশের জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে আগামী বছরের (২০২৬) জুনের মধ্যে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গৃহীত সংস্কার কার্যক্রম সামনে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।

 

বুধবার জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লীগের (জেবিপিএফএল) সভাপতি তারো আসো টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।

 

চার দিনের সরকারি সফরে প্রধান উপদেষ্টা বুধবার দুপুরে স্থানীয় সময় ২টা ৫ মিনিটে টোকিও পৌঁছান। সফরকালে তিনি নিক্কেই ফোরামে অংশগ্রহণের পাশাপাশি জাপানি নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।

 

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু তারো আসো, যিনি জেবিপিএফএল’র সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ড. ইউনূসকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে অগ্রসর করার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং একটি মসৃণ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি প্রধান বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে— সংস্কার, খুনিদের বিচার এবং সাধারণ নির্বাচন আয়োজন।

 

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠন এবং ঋণ পরিশোধে সরকার উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করেছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পূর্ববর্তী সরকার আমাদের দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, যার ফলে তরুণ সমাজের মধ্যে বিদ্রোহ সৃষ্টি হয়েছে। সেই তরুণরাই আমাকে এই বিশৃঙ্খলা দূর করার আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

 

তিনি বলেন, ‘গত দশ মাসে জাপান আমাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে। আমি জাপানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। এক অর্থে, এটি একটি কৃতজ্ঞতা সফর।

 

অধ্যাপক ইউনূস তারো আসোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যাতে তিনি নিজের চোখে পরিবর্তনগুলো দেখতে পারেন।

 

সাক্ষাতের সময় তারো আসোর সঙ্গে থাকা কয়েকজন জাপানি সংসদ সদস্য বলেন, ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ) স্বাক্ষর বাংলাদেশে বৃহত্তর পরিসরে জাপানি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।

বাংলাদেশ আগামী আগস্টের মধ্যে আলোচনার কাজ শেষ করে সেপ্টেম্বর মাসে ইপিএ চুক্তি স্বাক্ষরের প্রত্যাশা করছে।

 

এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে, জাপান হবে বাংলাদেশে ইপিএ স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশ।

 

প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিস্থিতি সম্পর্কে জাপানি সংসদ সদস্যদের অবহিত করেন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এজেন্ডা বাস্তবায়নে তাদের সহায়তা কামনা করেন।

 

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট অন্যান্য শরণার্থী সংকটের থেকে ভিন্ন। কারণ, তারা অন্য কোনো দেশে যাওয়ার জন্য অনুনয় করছেন না, বরং নিজ দেশে ফেরার দাবি করছেন।

 

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে: নাহিদ ইসলাম

» তৌহিদ আফ্রিদিকে বরিশালে বিশেষ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে সিআইডি-পুলিশ

» পিআর পদ্ধতি অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে: তাহের

» এনসিপি নেতা আহতের ঘটনায় রুমিন ফারহানার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন সারজিস আলম

» খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে ফিরোজায় পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী

» কাঠামোগত পরিবর্তন না এলে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করব: নাহিদ ইসলাম

» জাতীয় যুব ফোরাম, নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে ক্রীড়া সরঞ্জাম বিতরণ

» বড়াইগ্রামে ছাত্র শিবিরের আয়োজনে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান 

» ৮২৮ ফ্যান ফেস্টিভালে ১০০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের বেশি সক্ষমতার ব্যাটারি নিয়ে আসছে রিয়েলমি

»  মোরেলগঞ্জে বাগেরহাটে ৪টি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে সড়ক অবরোধ

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

যেকোনো পরিস্থিতিতে ছাব্বিশের জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে আগামী বছরের (২০২৬) জুনের মধ্যে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গৃহীত সংস্কার কার্যক্রম সামনে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।

 

বুধবার জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লীগের (জেবিপিএফএল) সভাপতি তারো আসো টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।

 

চার দিনের সরকারি সফরে প্রধান উপদেষ্টা বুধবার দুপুরে স্থানীয় সময় ২টা ৫ মিনিটে টোকিও পৌঁছান। সফরকালে তিনি নিক্কেই ফোরামে অংশগ্রহণের পাশাপাশি জাপানি নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।

 

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু তারো আসো, যিনি জেবিপিএফএল’র সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ড. ইউনূসকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে অগ্রসর করার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং একটি মসৃণ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি প্রধান বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে— সংস্কার, খুনিদের বিচার এবং সাধারণ নির্বাচন আয়োজন।

 

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠন এবং ঋণ পরিশোধে সরকার উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করেছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পূর্ববর্তী সরকার আমাদের দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, যার ফলে তরুণ সমাজের মধ্যে বিদ্রোহ সৃষ্টি হয়েছে। সেই তরুণরাই আমাকে এই বিশৃঙ্খলা দূর করার আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

 

তিনি বলেন, ‘গত দশ মাসে জাপান আমাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে। আমি জাপানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। এক অর্থে, এটি একটি কৃতজ্ঞতা সফর।

 

অধ্যাপক ইউনূস তারো আসোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যাতে তিনি নিজের চোখে পরিবর্তনগুলো দেখতে পারেন।

 

সাক্ষাতের সময় তারো আসোর সঙ্গে থাকা কয়েকজন জাপানি সংসদ সদস্য বলেন, ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ) স্বাক্ষর বাংলাদেশে বৃহত্তর পরিসরে জাপানি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।

বাংলাদেশ আগামী আগস্টের মধ্যে আলোচনার কাজ শেষ করে সেপ্টেম্বর মাসে ইপিএ চুক্তি স্বাক্ষরের প্রত্যাশা করছে।

 

এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে, জাপান হবে বাংলাদেশে ইপিএ স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশ।

 

প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিস্থিতি সম্পর্কে জাপানি সংসদ সদস্যদের অবহিত করেন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এজেন্ডা বাস্তবায়নে তাদের সহায়তা কামনা করেন।

 

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট অন্যান্য শরণার্থী সংকটের থেকে ভিন্ন। কারণ, তারা অন্য কোনো দেশে যাওয়ার জন্য অনুনয় করছেন না, বরং নিজ দেশে ফেরার দাবি করছেন।

 

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com